ড. মুহাম্মাদ রফীকুর রহমান মাদানী
চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলাস্থিত বেলঘর গ্রামের একটি সম্ভ্রান্ত আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মোঃ আব্দুল মতিন এবং মাতার নাম মোবাশ্শেরা বেগম। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তিনি তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল থেকে কামিল (১৯৬২-১৯৭০ সাল) পর্যন্ত প্রতিটি পরীক্ষায় স্কলারশিপ নিয়ে কৃতিত্বের সাথে পাস করেন। ১৯৭৬ সালে মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি নিয়ে তিনি সৌদি আরব গমন করেন এবং পঞ্চাশটিরও অধিক দেশ থেকে আগত মেধাবী ছাত্রদের মাঝে শতকরা সাতানব্বই ভাগ নাম্বার পেয়ে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান লাভ করে লিসান্স কোর্স সম্পন্ন করেন। কৃতিত্বের স্বাক্ষরস্বরূপ তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর তৎকালীন যুবরাজ পরবর্তীতে বাদশাহ ফাহদ বিন আব্দুল আযীযের হাতে প্রদত্ত সার্টিফিকেট ও পুরস্কার লাভ করেন, যা সৌদি টেলিভিশনে ফলাও করে প্রচার করা হয়। ১৯৮০ সালে সৌদি ইসলামিক অ্যাফেয়ারস মন্ত্রণালয়ের অধীনে দীনী দাওয়াতের দায়িত্ব নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। ১৯৮১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগ থেকে এমএ (প্রথম শ্রেণিতে প্রথম) ডিগ্রি লাভ করেন এবং সম্মানসূচক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক পুরস্কারপ্রাপ্ত হন। ২০১৪ সালে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া থেকে ‘প্রিপ্যায়ারিন্স অফ ইসলামিক দাঈ’ ইন ইডুকেশনাল, কালচারাল, স্প্রিচুয়াল আসপেকটস’ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮০ সালে নরসিংদীর জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে শুরু হয় তার কর্মজীবন। সেখানে তিনি দীর্ঘদিন উপাধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করেন। ১৯৯৭ সালে তা’মিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় শায়খুল হাদীস পদে নিযুক্ত হন এবং ২০০৬ সালে তিনি বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে চেয়ারম্যান পদে যোগদান করেন এবং অদ্যাবধি এ পদে বহাল আছেন। ১৯৯৫ সালে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত স্বর্ণপদক লাভ করেন। মাতৃভাষা বাংলা ছাড়াও আরবী, ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় তার দক্ষতা রয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন, অংশগ্রহণ ও ভ্রমণের উদ্দেশ্যে তিনি সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া ভ্রমণ করেছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত ‘ইসলামী বিশ্বকোষ’-এ তার বেশ কয়েকটি প্রবন্ধ রয়েছে। তিনি বেশ কয়েকটি ব্যাংক-বীমা কোম্পানির শরী‘আ কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তিন ছেলে ও দুই মেয়ের জনক।